 
							
							 
                    
মুবিন বিন সোলাইমান
হাদিসের ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে খোরাসান অঞ্চল যদি ইরানসহ আশেপাশে কয়েকটি দেশ হয় তবে, “আল-মালহামা” যুদ্ধের সঙ্গেও বর্তমান বিশ্বে চলমান এই ঘটনাবলীর মিল পাওয়া যায়।
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ যুদ্ধ যদি সত্যিই শুরু হয়, তা বিশ্বকে টেনে নিতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে। তবে চমকপ্রদ বিষয় হলো—এই যুদ্ধের ভবিষ্যদ্বাণী বহু আগেই করেছিলেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)।
হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, খোরাসান অঞ্চল থেকে এক বাহিনী কালো পতাকা হাতে রওনা হবে, যাদের রুখে দেওয়ার ক্ষমতা কারও থাকবে না—যতক্ষণ না তারা বায়তুল মুকাদ্দাসে সেই পতাকা উত্তোলন করে। ইসলামী চিন্তাবিদরা বলেন, এই হাদিসে বর্ণিত খোরাসান অঞ্চল বর্তমান ইরান, আফগানিস্তান ও তুর্কমেনিস্তানের কিছু অংশকে নির্দেশ করে—যার বেশিরভাগই আজকের ইরানের অন্তর্গত।
হাদিসের এই ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে, ইরান থেকেই সেই কালো পতাকাবাহী বাহিনী আসবে, যারা আল-আকসা মসজিদ তথা বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয় করবে। এই শহর বর্তমানে দখল করে রেখেছে ইসরায়েল, যদিও জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনও পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের অংশ হিসেবেই বিবেচনা করে।
১৯৮০ সালে ইসরায়েল “জেরুজালেম আইন” পাশ করে শহরটিকে নিজেদের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করে। কিন্তু সেই দাবি জাতিসংঘ প্রত্যাখ্যান করে। বর্তমানে আল-আকসাসহ পুরো জেরুজালেমই ইসরায়েলের দখলে রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে অনেকেই মনে করছেন, হাদিসে বর্ণিত সেই যুদ্ধের বাস্তবতা কি সামনে এগিয়ে আসছে?
মহানবী (সা.) আরও বলেছেন, “যখন তোমরা খোরাসান থেকে কালো পতাকা আসতে দেখবে, তখন তাদের সঙ্গে যোগ দাও। কারণ, তাদের মধ্যেই রয়েছেন আল্লাহর খলিফা—ইমাম মাহদী।” ফলে ইসলামী ইতিহাসবিদ ও আলেমদের অনেকেই মনে করেন, এই বাহিনীর নেতৃত্বে ইমাম মাহদী থাকবেন এবং যুদ্ধটি কেয়ামতের বড় আলামতের অন্যতম হবে।
বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ংকর যুদ্ধ হিসেবে হাদিসে বর্ণিত “আল-মালহামা” নামের যুদ্ধের সঙ্গেও এই ঘটনাবলীর মিল পাওয়া যায়। এটি এমন এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হবে যার মাধ্যমে ইমাম মাহদীর নেতৃত্বে ইসলামি খেলাফতের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ঘটবে—এমনটাই মনে করেন বহু ইসলামি গবেষক।
১৩ জুন ইসরায়েল “অপারেশন রাইজিং লায়ন” নামে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে। তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইরানের উচ্চপর্যায়ের সেনা কর্মকর্তা, পরমাণু বিজ্ঞানী, সাংবাদিক ও সাধারণ নাগরিক হতাহত হন। জবাবে পাল্টা হামলা চালায় ইরান। ইরান-ইসরায়েল এই পাল্টাপাল্টি হামলা এখন প্রায় নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—তবে কি আমরা কেয়ামতের শেষ অধ্যায়ের দ্বারপ্রান্তে? এই প্রশ্নের উত্তর একমাত্র আল্লাহই জানেন।