কেজিডিসিএল-এর (কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড) ২৯১ কোটি টাকার প্রিপেইড মিটার প্রকল্পে গ্রাহকদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে নিয়োজিত সার্ভিসম্যানরা।
২০১৮ সালে ৬৫ হাজার গ্রাহকের জন্য এই প্রকল্প শুরু হয়। তবে নানা জটিলতায় ২০১৯ সালে তা স্থগিত হয়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০২৪ সালে পুনরায় চট্টগ্রামে ১ লাখ আবাসিক গ্রাহককে প্রিপেইড মিটার সংযোগের আওতায় আনতে জাপানি একটি কোম্পানির সাথে নতুন চুক্তি করে কেজিডিসিএল।
বিনা খরচে দেওয়ার কথা, তবুও আদায় হচ্ছে হাজার হাজার টাকা
প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, রাইজার থেকে প্রতিটি চুলার জন্য আলাদা মিটার, ১০ ফুট জি.আই পাইপ, এবং যাবতীয় সরঞ্জামের সম্পূর্ণ খরচ কেজিডিসিএল বহন করছে। কিন্তু বাস্তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকৃত সার্ভিসম্যানরা গ্রাহকদের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায় করছে।
প্রতিটি চুলার জন্য তারা নিচ্ছে সর্বনিম্ন ১ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকা। টাকা না দিলে ইচ্ছাকৃতভাবে রাইজার বা গ্যাস লাইনে সমস্যা সৃষ্টি করে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।
ভুক্তভোগী গ্রাহক রফিক বলেন,
“আমি কোম্পানির নিয়ম অনুযায়ী কাজ করতে বলেছি। কিন্তু তারা রাইজার ক্ষতিগ্রস্ত করে দিয়ে টাকা দাবি করেছে। বলেছে— টাকা দিলে আধা ঘণ্টার মধ্যেই কাজ করে দেবে।”
ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে উঠছে
অনেক গ্রাহক অজানা আতঙ্কে প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না। তারা সার্ভিসম্যানদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ছেন। কোম্পানির পক্ষ থেকে বারবার গ্রাহকদের সতর্ক করা হলেও ভয়ের কারণে অনেকে টাকা দিয়ে সংযোগ নিচ্ছেন।
কী বলছে কেজিডিসিএল?
কেজিডিসিএল সূত্র জানিয়েছে,
“প্রকল্পের আওতায় গ্রাহকদের কোনো টাকা দেওয়ার কথা নেই। যদি কেউ জোর করে টাকা আদায় করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে বাস্তব চিত্র ভিন্ন। এই অব্যবস্থাপনা ও সার্ভিসম্যানদের লাগামহীন অর্থ বাণিজ্য নিয়ে এখন ক্ষোভে ফুঁসছে চট্টগ্রামের সাধারণ গ্যাস গ্রাহকরা।