আব্বাস হোসাইন আফতাব :
চোখের জল আর ভালোবাসায় বিদায় জানানো হলো মাইলস্টোন স্কুল ট্রাজেডিতে নিহত রাঙামাটির কিশোর উক্য চিং মারমাকে। একটি দুর্ঘটনা নিভিয়ে দিল সম্ভাবনাময় এক জীবনের প্রদীপ।
বুধবার (২৩ জুলাই) বিকাল ৪টায় রাজস্থলী উপজেলার বাঙালহালিয়া ইউনিয়নের পারিবারিক শ্মশানে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তার আগে সকাল থেকেই শুরু হয় ধর্মীয় রীতি অনুসারে আচার ও শেষকৃত্যানুষ্ঠান। আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, পরিচিতজনেরা ছুটে আসেন শেষ বিদায়ে অংশ নিতে। অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন, স্মৃতিচারণ করেন উক্যর নিষ্পাপ মুখ, প্রাণবন্ত আচরণ আর হাসিমাখা চোখের কথা। শেষকৃত্যস্থলে যেন এক মুহূর্তের জন্য সময় থমকে দাঁড়ায়।
মা তেজিপ্রু মারমা আর বাবা উসাইমং মারমা বারবার ছেলের কথা স্মরণ করে মূর্ছা যাচ্ছিলেন। নিথর নিস্তব্ধ হয়ে ছেলের মুখের দিকে চেয়ে ছিলেন তারা—শেষবারের মতো। ছেলের বিদায়ে সবার কাছে দোয়া আর আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন তাঁরা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সজীব রুদ্র গভীর রাতে ছুটে যান শোকাহত পরিবারটির পাশে। তিনি বলেন, “এমন মর্মান্তিক মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এই ক্ষতি অপূরণীয়। পরিবারটির প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানাই।”
ঘটনা যেভাবে…
গত সোমবার (২১ জুলাই) বেলা ১ টার দিকে ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হলে ঘটে হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা।
সেই সময় ভবনের একটি কক্ষে অবস্থান করছিলেন ৭ম শ্রেণির ছাত্র উক্য চিং মারমা। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় তাকে ঢাকার বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। রাত ২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মেধাবী এই কিশোর শুধু পরিবারের নয়, গোটা বাঙালহালিয়া গ্রামের গর্ব ছিল।
আজ, তার শূন্যতা যেন পাহাড়ঘেরা রাঙামাটির হৃদয়ে গভীর ক্ষতের মতো রয়ে গেল।