রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপি নেতা জিল্লুর রহমান ভান্ডারীর খুনিদের ফাঁসির রায় অবিলম্বে কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুমাম কাদের চৌধুরী। রোববার (২৭ জুলাই) বিকেলে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের সাহেবনগর এলাকায় ভান্ডারীর কবর জিয়ারতের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
হুমাম কাদের বলেন, “গত ১৬ বছরে রাঙ্গুনিয়ার অনেক এলাকায় আমাদের নেতা-কর্মীরা থাকতে পারেননি। বহু মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি তাদের কবর জিয়ারত করাও সম্ভব ছিল না। এখন গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছি। নিহত প্রত্যেকের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবো।”
জিল্লুর রহমান ভান্ডারী প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“যে প্রেক্ষাপটে জিল্লুর সাহেবকে হত্যা করা হয়েছিল, তার বিচার যদি এখনও না হয়, তাহলে আর কোনোদিনই হবে না। যাদের বিরুদ্ধে রায় হয়েছে, তাদের ফাঁসির আদেশ এখনো কার্যকর হয়নি, কারণ তারা আওয়ামী সন্ত্রাসী ছিল। আশা করছি, এবার আমরা ন্যায়বিচার পাবো। উপরওয়ালা যদি এটিকে কবুল করে থাকেন, তবে অবশ্যই দণ্ড কার্যকর হবে।”
এর আগে সাহেবনগরে হুম্মাম কাদেরের আগমন ঘিরে এলাকা জুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। জিল্লুর ভান্ডারীসহ অন্যান্য মুরব্বীদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় জেয়ারত ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। পরে এলাকাবাসীর মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়।
স্থানীয় সাধারণ জনগণ ও বিএনপি নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন হাতে ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকরের দাবিতে সড়কের দুই পাশে অবস্থান নেন। হুমাম কাদের চৌধুরী উপস্থিত হলে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান তারা এবং রায় কার্যকরের বিষয়ে তার সহায়তা কামনা করেন।
এসময় স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়াও রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড থেকে হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। জিল্লুর ভান্ডারীর পরিবারের পক্ষ থেকে তার ছোট ভাই সৌদি প্রবাসী মো. ইকবাল হোসেন, যুবদল নেতা নিজাম উদ্দিন ও জিয়াউদ্দিন বাবলু উপস্থিত ছিলেন।
পরে হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে সাহেবনগর থেকে একটি মিছিল বের হয়ে ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে আয়োজিত জনসভায় গিয়ে মিলিত হয়। জনসভায় বক্তৃতাকালে জিল্লুর ভান্ডারীর পরিবারের সদস্যরা হুমাম কাদেরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি রাতে রাঙ্গুনিয়ার রানীরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গেটের সামনে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন বিএনপি নেতা জিল্লুর রহমান ভান্ডারী।
এ ঘটনায় ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আদালত রায় ঘোষণা করেন।
দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তারা হলেন – মো. খোকন
মো. ইসমাইল ওরফে পিস্তল ইসমাইল।
এছাড়া ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- মো. আবু
মো. কামাল, মো. জসিম, মো. তোতা মিয়া, মো. নাসির, মো. সুমন ওরফে সিএনজি সুমন।