
আব্বাস হোসাইন আফতাব :
সময় যেন থমকে দাঁড়িয়েছিল রাঙ্গুনিয়া সরকারি কলেজের হলরুমে। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে আয়োজন করা হয় এক হৃদয়ছোঁয়া বিদায় সংবর্ধনার। বিদায় নিলেন প্রিয় তিনজন সহকর্মী হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন আহমদ, পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ সেলিম রেজা এবং অফিস সহকারী মো. আবদুল মান্নান পাটওয়ারী।
তাদের বিদায়ে আকাশে যেন মিশে গেলো এক অদৃশ্য সুর—কৃতজ্ঞতার সুর, ভালোবাসার সুর, আর দীর্ঘ পথচলার অব্যক্ত স্মৃতির সুর।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শেখ মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবু ইউসুফ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. মুহাম্মদ আবদুল মাবুদ।
বক্তারা একে একে খুলে দেন স্মৃতির ঝাঁপি—
কেউ বললেন প্রেরণার গল্প, কেউ তুলে ধরলেন প্রজ্ঞার ছাপ, কেউ আবার চোখের কোণে ধরে রাখলেন অশ্রুজল। প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ এ কে এম সুজা উদ্দিন, পালি বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান ড. সৌমিত্র বড়ুয়া, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান রাজিয়া সুলতানা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান এন কে এম শাহারিয়ার, দর্শন বিভাগের প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ নাসিম উদ্দিন এবং বাঁশখালী আলাওল সরকারি কলেজের প্রভাষক রেহানা বেগম-এর কণ্ঠে শোনা গেলো একই সুর—‘আপনাদের অবদান ভুলবে না এই প্রতিষ্ঠান।’
শিক্ষক আবু মোহাম্মদ নুরুল মোমেন চৌধুরী, মোকতার হোসেন, মনোজিত কুমার ধর, ড. মর্তুজা মোরশেদুল আনোয়ার, হোমায়রা রওশন, নাসির উদ্দিন সিকদার, ইফতেখার হোসাইন ও ইফতেখার আলম-এর বক্তব্যেও ছিল শ্রদ্ধা আর মমতার গভীর ছাপ। বিদায়ী অতিথিদের উদ্দেশ্যে পাঠ করা মানপত্রে জিনাত জাহান, তাহমিনা ইয়াসমিন নূর ও মোতাহের হোসেন যেন তুলে ধরলেন এক অদৃশ্য প্রতিশ্রুতি—”আপনাদের পদচিহ্নে চলবে আগামী প্রজন্ম।”
শেষে বিদায়ী অতিথিদের হাতে যখন সম্মাননা স্মারক ও উপহার তুলে দেওয়া হলো, তখন করতালি মিশে গেলো অশ্রুজলে; মনে হলো—
“বিদায় নয়, এটি এক দীর্ঘ বন্ধুত্বের আরেক রঙিন অধ্যায়।”
