প্রশাসনে নারীদের দৃপ্ত পদচারণা
আব্বাস হোসাইন আফতাব :
নারীরা আর পিছিয়ে নেই—মাঠ প্রশাসনেই তার প্রমাণ মিলছে। রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় বর্তমানে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তরের দায়িত্বে রয়েছেন ১১ জন নারী কর্মকর্তা। ভূমি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবার পরিকল্পনা, নির্বাচন, আইসিটি, পরিসংখ্যানসহ নানা খাতে তাঁদের দক্ষতা ও মানবিক সেবায় মুগ্ধ সাধারণ মানুষ।
ভূমি প্রশাসনে মারজান
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারজান হোসাইন ২০২৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাঙ্গুনিয়ায় যোগদানের পর ভূমি অফিসে এনেছেন শৃঙ্খলা ও জনবান্ধবতা।
সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, প্রবেশে নিয়ন্ত্রণ, দালাল বিরোধী অভিযান—তাঁর নেওয়া উদ্যোগগুলো জনপ্রশাসনের মধ্যে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।
বর্তমানে তিনি রাঙ্গুনিয়া পৌর প্রশাসক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায়।
স্বাস্থ্য, প্রাণিসম্পদ ও শিক্ষা খাতে নারীদের নেতৃত্ব
ডা. জয়নাব জমিলা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় এনেছেন গতি ও শৃঙ্খলা।
ডা. শরমিন আক্তার, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, মাঠপর্যায়ে প্রাণিসেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছেন। বাড়ি নীলফামারী, আগের কর্মস্থল চট্টগ্রাম কোতোয়ালি।
সালমা ইসলাম, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। মূল দায়িত্ব বোয়ালখালী হলেও রাঙ্গুনিয়ায়ও দায়িত্ব পালন করছেন আন্তরিকভাবে। বাড়ি ঢাকায়।
নির্বাচন, পরিবার পরিকল্পনা, আনসার ও পরিসংখ্যানে নারীর কর্মদ্যুতি
জাকিয়া হোসনাইন, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, এ বছরের ২১ মে যোগ দেন। বাড়ি কক্সবাজার।
ডা. কাউসার আক্তার পপি, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্বে, আগ্রাবাদ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে মূল দায়িত্ব পালন করছেন।
শামীমা আক্তার, উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন ২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে। বাড়ি পটিয়ায়।
মধুলিনা মৌ দত্ত, উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসার, ২০২৩ সালের ২৫ জুলাই যোগদান করেন। বাড়ি আনোয়ারা উপজেলায়।
তথ্যপ্রযুক্তি, মহিলা বিষয়ক ও প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগেও নেতৃত্বে নারী
জিন্নাত সুলতানা, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা। মূল দায়িত্ব হাটহাজারী উপজেলায় হলেও সময় দেন রাঙ্গূনিয়ায়। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ, নারী নির্যাতন প্রতিকারসহ নানা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত।
বুশরা রহমান, আইসিটি দপ্তরের সহকারী প্রোগ্রামার, তথ্যপ্রযুক্তি সেবায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
নাসরিন আজাদী, তথ্যসেবা কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে।
এই ১১ জন নারী কর্মকর্তা প্রমাণ করেছেন—দায়িত্ব, দক্ষতা ও নিষ্ঠায় তাঁরা কোনোভাবেই পিছিয়ে নেই। বরং প্রশাসনের নানা স্তরে তাঁদের অংশগ্রহণ এক নতুন উদাহরণ তৈরি করছে রাঙ্গুনিয়ার জন্য।
ইউএনওর মূল্যায়ন—
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান বলেন,
“পুরুষের পাশাপাশি নারী কর্মকর্তারাও অত্যন্ত ভালো কাজ করছেন। প্রশাসনে নারীদের অবদান এখন অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তাঁদের যথাযথ মূল্যায়ন করা উচিত।”
ছবির ক্যাপশন— মারজান হোসাইন, জয়নাব জমিলা, ডা. শরমিন আকতার, সালমা ইসলাম, জাকিয়া হোসনাইন,শামীমা আকতার, বুশরা রহমান, মধুলিনা মৌ দত্ত, ডা. কাউসার আকতার পপি, জিন্নাত সুলতানা, নাসরিন আজাদী। (উপরে বাম থেকে ডানে)