
আব্বাস হোসাইন আফতাব: রাতদিনের পরিশ্রমে পরিবারকে একটু স্বচ্ছলতা দেওয়ার স্বপ্ন ছিল তার। ছোট্ট গ্রাম থেকে দূর দেশে গিয়ে কঠোর শ্রমে উপার্জিত টাকায় বাবা-মা, ভাইবোনদের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন ময়ুর উদ্দিন (২২)। কিন্তু নির্মম ভাগ্যের খেলায় সেই স্বপ্ন আর পূর্ণ হলো না।
গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানের বোয়ালী এলাকায় ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে গাড়িতে রওনা হয়েছিলেন ময়ুর। গাড়ি উল্টে আহত হলেও শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেল না তাকে। স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত্যুর খবর দেন।
রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া ইউনিয়নের উত্তর পারুয়া গ্রামের আবুল হাশেমের ছোট ছেলে ছিলেন ময়ুর। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার আদরের। মাত্র তিন বছর আগে পরিবারের অভাব ঘোচাতে প্রবাসে পাড়ি জমান। কাজ করতেন একটি মাছ পরিবহনকারী প্রতিষ্ঠানে। কয়েক মাস আগে দেশে এসে বাবা-মা, ভাইবোন ও আত্মীয়দের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে আবারও ফিরে গিয়েছিলেন প্রবাস জীবনের টানে। কিন্তু এবার আর জীবিত অবস্থায় দেশে ফেরা হলো না।
নিহতের বড় ভাই আবদুল শুক্কুর কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,
“আমাদের চার ভাইবোনের মধ্যে সে ছিল সবার ছোট। পরিবারে সবার প্রিয় ছিল। আমরা এখন তার লাশের অপেক্ষায় আছি।”
গ্রামের মানুষ জানালেন, ময়ুর ছিলেন ভদ্র ও পরিশ্রমী তরুণ। তার অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আজও হয়তো মা দরজার দিকে তাকিয়ে আছেন—ভেবেছেন, ছোট ছেলে ময়ুর ফিরে আসবে। কিন্তু এবার ফিরবে কেবল নিথর দেহ, লাল পতাকায় ঢাকা কফিনে।