চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ সাবেক এলাকায় অবস্থিত মা ভবানী একতা সংঘ এবার শারদীয় দুর্গোৎসবে একটি ব্যতিক্রমী আয়োজন করেছে। প্রতি বছরই সংগঠনটি নানান থিমভিত্তিক মণ্ডপ তৈরি করে দর্শনার্থীদের মন জয় করে, কিন্তু এবারের আয়োজন তাদের পূর্বের সব আয়োজনকেই ছাড়িয়ে গেছে।
এবারের থিম নির্ধারণ করা হয়েছে “কৃষকের জীবনধারা”। আয়োজকরা জানিয়েছেন, কৃষি আর কৃষকের জীবন নিয়ে আমাদের সমাজে যে সম্মান ও সচেতনতার ঘাটতি আছে, সেটি পূরণের লক্ষ্যে এই থিম নেওয়া হয়েছে।
মণ্ডপে প্রতিমার পেছনে তৈরি করা হয়েছে ধানের ক্ষেত, কাশফুল, মাটির ঘর, লাঙ্গল-কোদালসহ কৃষকের জীবনের নিত্যচিত্র। দেবী দুর্গার সঙ্গে সন্নিবেশিত হয়েছে কৃষকের পরিশ্রম আর সংগ্রামের প্রতীকী উপাদান।
মণ্ডপের ভেতর ও বাইরে শোভা পাচ্ছে কৃষকের কাঁধে ধান, ক্ষেতের পাশে নারীদের ঝুড়ি নিয়ে হাঁটা, গ্রামের রাস্তা ও হাটবাজারের দৃশ্য।
এই মণ্ডপ তৈরি করছেন রাঙ্গুনিয়া ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দক্ষ শিল্পীরা। তারা বলেছেন, “আমরা চেষ্টা করছি কৃষকের জীবনযাত্রার প্রতিটি উপাদান বাস্তবের মতো ফুটিয়ে তুলতে। দর্শনার্থীরা যেন মণ্ডপে ঢুকেই গ্রামীণ জীবনের আসল আবহ অনুভব করতে পারেন।”
মা ভবানী একতা সংঘের আয়োজকরা পূজার পাঁচ দিনব্যাপী আরতি, প্রসাদ বিতরণ
দক্ষিণ সাবেক রাঙ্গুনিয়া ও আশপাশের গ্রামগুলো থেকে ইতিমধ্যেই দর্শনার্থীরা মণ্ডপ দেখতে আসা শুরু করেছেন। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, আনসার, স্বেচ্ছাসেবক দল ও সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
দর্শনার্থীদের জন্য থাকবে আলাদা বিশ্রামকেন্দ্র ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা।
মা ভবানী একতা সংঘের সভাপতি কেশব সাহা বলেন, “আমাদের এ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো কৃষকের জীবনযাত্রার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। আমরা চাই মানুষ বুঝুক—যারা মাঠে কাজ করে আমাদের খাদ্য যোগান দেয়, তাদের অবদান কতটা অমূল্য। দুর্গাপূজার মতো সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসব এই বার্তাকে ছড়িয়ে দিতে পারে।”
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পংকজ সাহা বলেন, “ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলেও আমরা চাই এই পূজা আমাদের এলাকার সামাজিক সম্প্রীতি আর ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠুক। কৃষকের জীবনধারা থিমের মাধ্যমে আমরা গ্রামীণ সংস্কৃতির সৌন্দর্যও তুলে ধরছি।
দক্ষিণ সাবেক রাঙ্গুনিয়ার মা ভবানী একতা সংঘের এই উদ্যোগ স্থানীয়দের পাশাপাশি আশপাশের এলাকার মানুষদেরও আকৃষ্ট করেছে। আয়োজকরা আশা করছেন, এবারের শারদীয় দুর্গোৎসবের এই ব্যতিক্রমী থিমভিত্তিক মণ্ডপ দর্শনার্থীদের কাছে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য আর গ্রামীণ জীবনের বাস্তবচিত্র উপহার দেবে।