আব্বাস হোসাইন আফতাব : শরৎ মানেই দুর্গোৎসবের আমেজ। আলোর ঝলক, ঢাকের বাদ্য আর শঙ্খধ্বনিতে মাতোয়ারা চারপাশ। সেই আমেজে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার স্বনির্ভর ইউনিয়নের দক্ষিণ সাবেক এলাকার মা ভবানী একতা সংঘ। শারদীয় দুর্গোৎসব ১৪৩২–এর পঞ্চম বর্ষপূর্তির এই আয়োজনে এবারের প্রতিপাদ্য রাখা হয়েছে “কৃষকের জীবনধারা”।
কৃষকের গল্প মণ্ডপে-
মণ্ডপজুড়ে সাজানো হয়েছে গ্রামীণ জীবনের ছবি। লাঙল চালানো, জমিতে চারা রোপণ, ধান কাটা ও গোলাভরা ফসল—সবই শিল্পকর্মের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যেন শিল্পের ভাষায় বলা হচ্ছে কৃষকের সংগ্রামের গল্প।
কৃষকের প্রতি কৃতজ্ঞতা
মা ভবানী একতা সংঘের সদস্য সৌরভ সাহা বলেন,
“আমরা প্রতিদিন যে ভাত খাই, তা কৃষকের ঘামের ফসল। তাই দুর্গোৎসবের আনন্দের মাঝেও আমরা কৃষকের অবদানকে শ্রদ্ধা জানাতে চাই। এ বছর কৃষকের গল্পই আমাদের প্রতিপাদ্য।”
নান্দনিক সাজসজ্জা
মাতৃ রুপায়ণে চট্টগ্রামের প্রখ্যাত মৃৎশিল্পী রতন কৃষ্ণ পাল । তিনি জানান, “দেবীর রূপায়ণে আমি মাটির গন্ধ, কৃষকের মুখের হাসি আর প্রকৃতির টানকেই তুলে ধরেছি। যাতে পূজামণ্ডপে ঢুকলেই মনে হয় আমরা যেন বাংলার গ্রামীণ জীবনে ফিরে গেছি।”
পরিচালনা পরিষদের অন্যতম সদস্য জয় সাহা বলেন,
এ বছর আমাদের থিম “কৃষকের জীবনধারা”। যেখানে সূর্যোদয় থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার প্রতিটি পরিশ্রমের গল্প, আমরা শিল্প এবং সংস্কৃতির মাধ্যমে ফুটিয়েছি। এই থিম আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় কৃষকের অক্লান্ত পরিশ্রম, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের নিবিড় সম্পর্ক এবং জীবনের সেই সরল সৌন্দর্য, যা প্রায়শই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে হারিয়ে যায়।
জানতে চাইলে পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কেশব সাহা বলেন, ‘আশা করি, আমাদের এই উৎসবের মাধ্যমে প্রত্যেকের হৃদয়ে কৃষক এবং প্রাকৃতিক জীবনধারার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আরও গভীর হবে। এছাড়াও, আমরা আনন্দ এবং মিলনের মাধ্যমে একসাথে এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে জীবন্ত রাখার চেষ্টা করি।’
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় বাসিন্দা সজল সাহা বলেন,
“এ উৎসব আমাদের শিকড়ের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। কৃষক ছাড়া আমাদের বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। এবারের পূজায় কৃষকের প্রতি যে সম্মান দেখানো হয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।”
আয়োজকরা আহ্বান জানিয়েছেন, কৃষকের জীবনচিত্রে ভরা এই ভিন্নধর্মী শারদোৎসব উপভোগ করতে।