আরুশ আরণ্যক
“যা দেবী সর্বভূতেষু শক্তিরূপেণ সংস্থিতা, নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ।”
নারী শক্তি এক অপরাজেয় শক্তি—যা সমাজ ও সংস্কৃতির প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে পড়েছে। এই শক্তির মহত্তম প্রতীক হলেন মা দূর্গা। তিনি কেবল পূজার্চনার দেবী নন; তিনি নারী জীবনের সংগ্রাম, সাহস, ধৈর্য ও সম্মানের চিরন্তন প্রতিচ্ছবি।
মা দূর্গার দশভুজে ধারণ করা প্রতিটি অস্ত্র আসলে নারীর অভ্যন্তরীণ শক্তির বহিঃপ্রকাশ। তিনি মহিষাসুরকে পরাজিত করেন, আর এর মাধ্যমে নারীর অদম্য ইচ্ছাশক্তি, প্রতিবন্ধকতাকে জয় করার দৃঢ় সংকল্প ও আত্মবিশ্বাসকে সামনে তুলে ধরেন। যেমন নারী সংসারের রক্ষক, তেমনি তিনি সংসারের শান্তি ও শৃঙ্খলার অবিচল প্রহরী।
নারী শক্তি শুধু শারীরিক বল নয়; এটি মানসিক ও আত্মিক দৃঢ়তা, যা মা দূর্গার প্রতিটি স্তব, শ্লোক ও দেবীমন্ত্রে প্রতিফলিত। আজকের সমাজেও আমরা দেখি—নারীরা নানা বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে শিক্ষা, কর্মক্ষেত্র ও নেতৃত্বে নিজেদের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা করছেন। তারা আসলে মা দূর্গার শক্তিরই ধারাবাহিকতা বহন করছেন।
মা দূর্গার জীবনপাঠ আমাদের শেখায়—নারীর ক্ষমতায়ন সমাজের অগ্রগতির মূল চাবিকাঠি। নারী শক্তি মুক্ত হলে সে শুধু নিজের নয়, গোটা জাতির জীবনে আলোকবর্তিকা হয়ে ওঠে।
অতএব, মা দূর্গার আরাধনা কেবল ধর্মীয় আচার নয়; এটি নারীর শক্তি, মর্যাদা ও ক্ষমতায়নের প্রতীক। নারীর প্রতি সম্মান দেখানো মানে মানবতার প্রতি সম্মান দেখানো। মা দূর্গা আমাদের মনে করিয়ে দেন—নারী শক্তির মর্যাদা রক্ষা করা মানেই মানবতার বিজয় নিশ্চিত করা।