
আব্বাস হোসাইন আফতাব :
সকালটা ছিল একেবারে স্বাভাবিক। প্রতিদিনের মতোই স্কুলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল সম্পূর্না সাহা মিমি। বয়স আট বছর। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার দক্ষিণ সাবেক রাঙ্গুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সে। মা সুমী সাহা ওই বিদ্যালয়েরই সহকারী শিক্ষিকা।
সাধারণত মা-মেয়ের স্কুলে যাওয়ার সময় এক হয়। কিন্তু আজ একটু ব্যতিক্রম ছিল। স্কুলে বিশেষ কাজ থাকায় মা সুমী সাহা সকালে আগেই বেরিয়ে যান। ভেবেছিলেন, মেয়ে গোসল সেরে পরে চলে আসবে। কিন্তু সেই ‘পরে’ আর হলো না।
বাড়ির পাশে পুকুরে গোসল করতে নেমেছিল মিমি। হঠাৎ কোনো এক মুহূর্তে পা ফসকে গভীর পানিতে চলে যায় সে। কিছুক্ষণ পর স্থানীয়রা ও পরিবারের সদস্যরা তাকে পানির নিচ থেকে উদ্ধার করে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালে আনার আগে সে মারা গেছে।
বাবা লিটন সাহা চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে। মেয়ের হঠাৎ মৃত্যুর খবরে ছুটে আসেন স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের গ্রামের বাড়িতে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক টিটু সেন বলেন, “মিমি আমাদের স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ফার্স্ট গার্ল ছিল। নাচ-গানে দারুণ পারদর্শী। প্রতিটি অনুষ্ঠানে সবার আগে থাকত। এমন মেধাবী আর প্রাণবন্ত মেয়ে হঠাৎ এভাবে চলে যাবে বিশ্বাসই হয় না।”
বিদ্যালয়ে প্রতিদিন এখন আর আসবেনা ছোট্ট মিমি। বন্ধু-সহপাঠীদের স্মৃতিতে রয়ে যাবে ছোট্ট মিমি। যে প্রতিদিন হাসিমুখে বলত, “আমি বড় হয়ে শিক্ষক হবো, ঠিক মায়ের মতো।”