
চট্টগ্রামের সংগীতপ্রেমীদের কাছে নতুন হলেও আধুনিক-লোক সঙ্গীতের জগতে রাঙ্গুনিয়ার সুব্রত ধর দ্রুতই পরিচিত হয়ে উঠেছেন। তার গানের কথাগুলো হৃদয় ছুঁয়ে যায়, আর সুরে আঞ্চলিকতা ও আধুনিকতার অনন্য মিশ্রণ লক্ষ্য করা যায়। সর্বপ্রথম নিজের লেখা ও সুরে “কারে বলিস কালো কালো” গানটির মাধ্যমে তিনি সঙ্গীতাঙ্গনে নিজেকে প্রমাণ করেন।
ভাইরাল গান: “ইনকাম পাঁচশত খরচ সাতশত”
সুব্রত ধরের “ইনকাম পাঁচশত খরচ সাতশত, আর দুইশত কডে পাইয়ুম, কামাইন্নে কম খইন্নে বেশি কেনে সংসার চালাইয়ুম” গানটি সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ভাইরাল হয়েছে। চট্টগ্রামের জীবনধারার সরল ভাষা ও আঞ্চলিক ছোঁয়া গানটিকে জনপ্রিয় করে তুলেছে। গানটির গীতিকার মাতাল সুকুমার।
নিজের লেখা, নিজের সুর
সুব্রত ধর কেবল গায়কই নন; তিনি নিজের গান লিখে সুরও তৈরি করেন। তার গানে প্রেম, বেদনা, স্মৃতি ও নস্টালজিয়া মিশে আছে। দোতারা, ব্যাঞ্জো, উকুলেলে ও হারমোনিয়ামে পারদর্শী সুব্রত আঞ্চলিক স্পর্শে তার সুরকে আরও বিশেষ করে তোলেন।
স্বীকৃতি ও সাফল্য
২০১৭ সালে জাতীয় শিশু কিশোর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় জেলা পর্যায়ে প্রথম স্থান ও জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া সুব্রত ধরের প্রতিভার পরিচায়ক। ঢাকা সিশনস-এ পারফরম্যান্স এবং স্থানীয় মঞ্চগুলোতে নিয়মিত অংশগ্রহণ তার প্রতিভা আরও উজ্জ্বল করেছে।
শিক্ষাজীবন ও প্রশিক্ষণ
সুব্রত চট্টগ্রাম কুলগাঁও সিটি কর্পোরেশন কলেজ থেকে এইচএসসি এবং চট্টগ্রাম কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করেছেন। ছোটবেলা থেকেই সংগীত শিখছেন। তার প্রথম প্রশিক্ষক ছিলেন প্রদীপ ধর, পরে শিল্পী সঞ্জয় দাশ, উস্তাদ স্বর্ণময় চক্রবর্তী ও বাউল শফি মন্ডল।
গ্রামের বাড়ি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
সুব্রত ধরের গ্রামের বাড়ি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের হরিহর বণিকপাড়া গ্রামে। তিনি ২০টির বেশি গান প্রকাশ করেছেন এবং ১০০টিরও বেশি গান নিজেই লিখে সুর করেছেন। তার লক্ষ্য দেশের বাইরে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ফোক সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দেওয়া।
সুব্রত ধরের গল্প প্রমাণ করে, প্রতিভা ও পরিশ্রম মিললে নতুন ধারার সংগীত জন্ম নেয়। রাঙ্গুনিয়ার এই নতুন মুখ ধীরে ধীরে দেশের মঞ্চে নিজের জায়গা তৈরি করছেন।