
আব্বাস হোসাইন আফতাব
সকালের মোলায়েম রোদটা যেন সেদিন একটু ভিন্নই ছিল। উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনের জানালা বেয়ে সেই আলো পড়ছিল অদ্ভুত এক অনুভূতির মতো, মিশে ছিল উষ্ণতা, কৃতজ্ঞতা আর বিদায়ের বিষাদ। কারণ, আয়োজনটি ছিল রাঙ্গুনিয়ার বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুল হাসানকে ঘিরে। দায়িত্বপ্রত্যয়ে, মানবিকতায় এবং উন্নয়ন ভাবনায় যে কর্মকর্তা রাঙ্গুনিয়ার মানুষের মন জয় করেছিলেন, তাকেই বিদায় জানাতে জড়ো হয়েছিলেন সবাই। উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা, রাঙ্গুনিয়ার আয়োজনে বিদায় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে চোখে-মুখে সবার কৃতজ্ঞতার ছাপ। যেন বিদায় নয়, বরং একজন মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান জানানোর বিশেষ অনুষ্ঠান।
‘ ইউএনও মো. কামরুল হাসান বললেন,
“রাঙ্গুনিয়া ছিল আমার পরিবারের মতো। এখানে মানুষের আন্তরিকতা ও সহযোগিতা আমাকে সবসময় অনুপ্রাণিত করেছে। উন্নয়ন, শিক্ষা, খেলাধুলা,প্রতিটি ক্ষেত্রে রাঙ্গুনিয়ার মানুষ আলাদা। তাদের ভালোবাসা আমি সারাজীবন মনে রাখব।”
তার কণ্ঠে ছিল গর্ব, ছিল আবেগ, শ্রোতাদের চোখে ছিল সম্মান আর গভীর আন্তরিকতা।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সচিব ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন। বক্তব্য দেন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সুমন শর্মা, রাঙ্গুনিয়া সরকারি কলেজের ক্রীড়া শিক্ষক মোতাহের হোসেন, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য ও সাংবাদিক আব্বাস হোসাইন আফতাব, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য ইকবাল আহমেদ বেলাল।
তাদের বক্তব্যে বারবার উঠে আসে ইউএনওর সৎ প্রশাসন, জনগণের প্রতি সহমর্মিতা, তরুণদের প্রতি উৎসাহ এবং মাঠপর্যায়ে তার নিরলস কাজের কথা। কেউ তাকে তুলনা করলেন “উন্নয়ন-হোক বা সংকট,সবসময় পাশে থাকা একজন অভিভাবকের” সঙ্গে।
অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ স্কাউটস রাঙ্গুনিয়ার যুগ্ম সম্পাদক এম. মোরশেদ আলম। তার সঞ্চালনায় পুরো পরিবেশ ছিল প্রাণবন্ত, আন্তরিক ও সংবেদনশীল।
আলোচনা শেষে বিদায়ী ইউএনওর হাতে স্মারক উপহার তুলে দেন অতিথিরা।
বিদায়ের মুহূর্তটা ছিল নীরব, তবু ছিল পূর্ণ।
মিলনায়তনের ভেতর দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলো যেন বলতে চাইছিল,
“ভাল থাকুন স্যার, আপনি রাঙ্গুনিয়ার মানুষের হৃদয়ে থাকবেন।”
ওইদিন অফিসার্স ক্লাব, ক্রীড়া সংস্থা, স্কাউটস,শিক্ষা পরিবার,ইউপি সচিবসহ বিভিন্ন দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেয়া হয়।