আজকের আধুনিক জীবনে বিদ্যুৎ আমাদের নিত্যদিনের অপরিহার্য অংশ। ঘরোয়া কাজ থেকে শুরু করে শিল্প, ব্যবসা, কৃষি—প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিদ্যুতের ওপর নির্ভরতা ক্রমেই বাড়ছে। কিন্তু এই সুবিধার পেছনে রয়েছে একটি অদৃশ্য ঝুঁকি—অতিরিক্ত ও অপচয়মূলক বিদ্যুৎ ব্যবহার, যা আমাদের আগামী দিনের জন্য সৃষ্টি করছে মারাত্মক সংকট।
অনেকেই হয়তো ভাবেন, “এটুকু বিদ্যুৎ ব্যবহার করলেই বা কী হবে!” কিন্তু সত্য হলো, অতি ব্যবহারের ফলে জাতীয় গ্রিডে বাড়ছে চাপ, লোডশেডিং হচ্ছে ঘনঘন, এবং জ্বালানি উৎপাদনের ব্যয় বহুগুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অপচয়ের কারণে বাজেটের বড় একটি অংশ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে খরচ হয়ে যাচ্ছে, যা দেশের উন্নয়নের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতকে পিছিয়ে দিচ্ছে।
এছাড়া অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বাড়ে, যার ফলে কার্বন নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়। এতে পরিবেশ দূষিত হওয়ার পাশাপাশি বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনেরও ঝুঁকি বাড়ে। আজ আমরা অপচয়ের যে আনন্দ উপভোগ করছি, আগামী প্রজন্মকে এর খেসারত দিতে হতে পারে ভয়াবহ পরিবেশগত বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়ে।
বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা শুধু রাষ্ট্রের দায় নয়, প্রত্যেক নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব। অপ্রয়োজনীয় লাইট–ফ্যান বন্ধ রাখা, বিদ্যুৎ-সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যবহার, গ্যাস সাশ্রয়, এবং সূর্যের আলো–বাতাসের সর্বোচ্চ ব্যবহার—এগুলো ছোট হলেও জাতীয়ভাবে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
মনে রাখুন,
আজকের সামান্য সচেতনতা আমাদের আগামী দিনের দুর্ভোগ কমাতে পারে।
এটি আনন্দ নয়—এটি দায়িত্ব।
নিজে সচেতন হই, অন্যকে সচেতন করি।
দেশকে এগিয়ে নিতে বিদ্যুৎ অপচয় রোধে একসঙ্গে কাজ করি।