আঞ্চলিক ভাষার সরলতা, জীবনের বাস্তবতা ও আধুনিক সুরের মেলবন্ধনে নিজস্ব ধারার সংগীত তৈরি করে অল্প সময়েই শ্রোতাদের নজর কেড়েছেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার তরুণ শিল্পী সুব্রত ধর। টেলিভিশন ও বেতারের নিয়মিত এই শিল্পীর সঙ্গে কথা বলেছেন আব্বাস হোসাইন আফতাব ও অর্ণব মল্লিক।
প্রশ্ন: সংগীতে আপনার যাত্রা কীভাবে শুরু হলো?
সুব্রত ধর:
ছোটবেলা থেকেই গান আমার জীবনের অংশ। পরিবার ও গ্রামের পরিবেশ থেকেই সংগীতের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়। শুরুতে শুধু গান গাইতাম, পরে ধীরে ধীরে গান লেখা ও সুর করার দিকে ঝুঁকি।
প্রশ্ন: “কারে বলিস কালো কালো” গানটি আপনার জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
সুব্রত ধর:
এই গানটাই আমাকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। নিজের লেখা ও নিজের সুরে গান করে মানুষের ভালোবাসা পাওয়া—এটাই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
প্রশ্ন: “ইনকাম পাঁচশত খরচ সাতশত” গানটি ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে। গানটির ভাবনা কীভাবে এলো?
সুব্রত ধর:
এটা সাধারণ মানুষের জীবনের গল্প। আয়-ব্যয়ের টানাপোড়েন, সংগ্রামের বাস্তবতা থেকেই গানটির জন্ম। চট্টগ্রামের ভাষায় বলেছি বলেই মানুষ নিজের জীবনের সঙ্গে মিল খুঁজে পেয়েছে।
প্রশ্ন: আপনি নিজেই গান লেখেন ও সুর করেন—এই প্রক্রিয়াটা কেমন?
সুব্রত ধর:
জীবনের ঘটনা, স্মৃতি আর চারপাশের মানুষ থেকেই গান আসে। কখনো কথায় আগে সুর, কখনো সুরে আগে কথা—সবই অনুভূতির ব্যাপার।
প্রশ্ন: কোন কোন বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারেন?
সুব্রত ধর:
দোতারা, ব্যাঞ্জো, উকুলেলে ও হারমোনিয়াম—এই যন্ত্রগুলোই আমার গানের সঙ্গী।
প্রশ্ন: ২০১৭ সালে জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া—এই অর্জন আপনাকে কী দিয়েছে?
সুব্রত ধর:
এই অর্জন আমাকে নিজের ওপর বিশ্বাস দিয়েছে। এরপর ঢাকা সেশনসসহ বড় মঞ্চে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি, যা আমার সংগীতজীবনে বড় অনুপ্রেরণা।
প্রশ্ন: আপনার সংগীতগুরুদের কথা বলবেন?
সুব্রত ধর:
আমার প্রথম গুরু প্রদীপ ধর। এরপর শিল্পী সঞ্জয় দাশ, উস্তাদ স্বর্ণময় চক্রবর্তী ও বাউল শফি মন্ডলের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি।
প্রশ্ন: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
সুব্রত ধর:
আমি চাই চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার ফোক গান দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও পৌঁছাক। চট্টগ্রামের ভাষার গানকে আমি বিশ্বে তুলে ধরতে চাই।
প্রশ্ন: পাঠক ও শ্রোতাদের জন্য কোনো বার্তা?
সুব্রত ধর:
আপনারা পাশে থাকলে আরও ভালো গান উপহার দিতে পারব। সবার দোয়া ও ভালোবাসা চাই।
শেষ কথা-
গ্রামের মাটি থেকে উঠে আসা এই শিল্পী দেখিয়ে দিচ্ছেন—শিকড়ের সুরই পারে বিশ্বমঞ্চে পৌঁছাতে।